Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

শিরোনাম
ফাল্গুন/১৪২৫ মাসে কৃষক ভাইদের করণীয়
বিস্তারিত

 

এ মাসের কৃষি : ফাল্গুন/১৪২৫ বাংলা মাসে কৃষকভাইদের করনীয়

 

কৃষিবিদ মো: মঞ্জুরম্নল হক                                                                                         

জেলা প্রশিক্ষন কর্মকর্তা,                                                          

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, রেলগেট, রাজশাহী।

 

  কৃষক ভাইয়েরা, আজ পহেলা ফাল্গুন। ঋতুরাজ বসমত্ম এসেছে আমাদের মাঝে। নতুন পাতার বর্ণিল রঙে প্রকৃতিতে লেগেছে নানা রঙের ছোঁয়া। ঘনকুয়াশার চাদর সরিয়ে প্রকৃতিকে নতুনভাবে সাজাতে, বাতাসে ফুলের সুবাস ছড়িয়ে দিতে ফাল্গুন আসে। নতুন প্রাণের উদ্যমতা আর অনুপ্রেরণা প্রকৃতির সাথে আমাদের কৃষিকেও দোলা দিয়ে যায় উলেস্নখযোগ্যভাবে। প্রতি বাংলা মাসের মত আজও আমরা উপস্থিত হয়েছি এমাসের কৃষি নিয়ে। কৃষক ভাইয়েরা, আপনারা অনেক কাজ করে থাকেন ফসলের জমিতে। এই আসরে চাষাবাদের সবগুলো বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়তো সম্ভব হবে না। তারপরও আমরা চেষ্টা করব মোটামুটি ভাবে এ মৌসুমের সবগুলো ফসলের প্রধান প্রধান বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করার। তবে আসুন জেনে নেয়া যাক এমাসের করণীয় কাজগুলো সম্পর্কে।

 

কৃষক ভাইয়েরা, শুরম্নতেই বোরো ধানের কথা। ধানের চারার বয়স ৫০-৫৫ দিন হলে ইউরিয়া সারের শেষ কিসিত্ম উপরিপ্রয়োগ করতে হবে; সার দেয়ার আগে জমির আগাছা পরিষ্কার করতে হবে এবং জমি থেকে পানি সরিয়ে দিতে হবে; ধানের কাইচ থোড় আসা থেকে শুরম্ন করে ধানের দুধ আসা পর্যমত্ম ক্ষেতে ৩/৪ ইঞ্চি পানি ধরে রাখতে হবে; পোকা দমনের জন্য নিয়মিত ক্ষেত পরিদর্শন করতে হবে এবং সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে (আলোর ফাঁদ পেতে, পোকা ধরার জাল ব্যবহার করে, ক্ষতিকর পোকার ডিমের গাদা নষ্ট করে, উপকারী পোকা সংরক্ষণ করে, ক্ষেতে ডাল-পালা পুঁতে পাখি বসার ব্যবস্থা করে) ধানক্ষেত বালাই মুক্ত রাখতে হবে; এ সময় ধান ক্ষেতে উফরা, বস্নাস্ট, পাতাপোড়া ও টুংরো রোগ দেখা দেয়; জমিতে উফরা রোগ দেখা দিলে কৃমিনাশক ফুরাডান ৫ জি বা কুরাটার ৫ জি প্রয়োগ করতে হবে; বস্নাস্ট রোগ দেখা দিলে ইউরিয়া সারের উপরিপ্রয়োগ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে হবে এবং একরপ্রতি ১৬০ গ্রাম ট্রুপার ৭৫ডবিস্নউপি বা জিল ৭৫ ডবিস্নউজি বা নাটিভো ৭৫ ডবিস্নউজি ১০-১৫ দিনের ব্যবধানে দুইবার প্রয়োগ করতে হবে; জমিতে পাতাপোড়া রোগ হলে অতিরিক্ত ৫ কেজি/বিঘা হারে পটাশ সার উপরিপ্রয়োগ করতে হবে এবং জমির পানি শুকিয়ে ৭-১০ দিন পর আবার সেচ দিতে হবে; টুংরো রোগ দমনের জন্য এর বাহক পোকা সবুজ পাতা ফড়িং দমন করতে হবে।

 

এ সময় বৃষ্টি নির্ভর উফশী আউশ হিসেবে বি আর-২০, বি আর-২১ এবং বি আর-২৪ বা ব্রিধান ৪৮ বা ব্রিধান ৮২ জাতের চাষ করতে পারেন। এ জাতগুলো স্বল্প মেয়াদি এবং ফলনের দিক থেকে দেশী আউশের চেয়ে প্রায় দ্বিগুন। ছিটিয়ে বা সারিতে এগুলোর বীজ বপন করা যায়। ছিটিয়ে বুনলে বিঘা প্রতি ৯-১০ কেজি এবং সারিতে বুনলে বিঘা প্রতি ৬-৭ কেজি বীজ প্রয়োজন হবে। এ সকল ধানের জন্য সারের মাত্রা হল প্রতি বিঘায় ইউরিয়া ১৭-১৮ কেজি, টি এস পি ১২-১৩ কেজি এবং এমওপি ৯-১০ কেজি। প্রয়োজনে প্রতি বিঘায় ৮ কেজি জিপসাম এবং ১.৫ কেজি দসত্মা সার প্রয়োগ করতে হবে। শেষ চাষের সময় ইউরিয়ার তিন ভাগের এক ভাগ এবং অন্যান্য সারের সবটুকু জমিতে দিয়ে দিতে হবে ।

 

আসছি গম চাষের কথায়- ঠিক সময়ে লাগানো গম এ মাসের মাঝামাঝি থেকে পাকতে শুরম্ন করবে। বীজ ক্ষেতের যে অংশ থেকে বীজ গম সংগ্রহ করবেন গম কাটার আগে শেষ বারের মত সেই জায়গার বিজাত বাছাই করে নিতে হবে। গম সকালে অথবা পড়মত্ম বিকালে কাটতে হবে । এ মাসের দ্বিতীয় পক্ষ থেকে গম পাকা শুরু হয়; গম শীষের শক্ত দানা দাঁত দিয়ে কাটলে যদি কট কট শব্দ হয় তবে বুঝতে হবে গম কাটার সময় হয়েছে; সকালে অথবা পড়মত্ম বিকেলে ফসল কাটা উচিত; বীজ ফসল কাটার পর রোদে শুকিয়ে তাড়াতাড়ি মাড়াই ঝাড়াই করে ফেলতে হবে। সংগ্রহ করা বীজ ভালো করে শুকানোর পর ঠান্ডা করে সংরক্ষণ করতে হবে।

 

 

ভুট্টা ক্ষেতে কি করবেন সে বিষয়ে কিছু আলোচনা করা যাক- ভূট্টার জমিতে ৭০-৮০ ভাগ গাছের মোচা খড়ের রং ধারন করলে এবং পাতার রং কিছুটা হলদে হলে মোচা সংগ্রহ করে নিতে হবে। খরিপ মৌসুমে ভুট্টা চাষ করতে চাইলে এখনই ভুট্টার বীজ বপন করতে হবে। মোচা সংগ্রহের পর উঠানে পাট বিছিয়ে তার ওপর শুকানো যায় অথবা জোড়া জোড়া বেঁধে দড়ি বা বাঁশের সাথে অথবা অনেকে টিনের চাল বা ঘরের বারান্দায় ঝুলিয়ে শুকানোর কাজটি করা যায়। খরিফ ভুট্টা চাষ করতে চাইলে এখনই বীজ বপন করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় যত্ন নিতে হবে; আমাদের দেশে চাষের উপযোগী ভুট্রার উন্নত জাতগুলো হলো : বারি ভুট্টা-৬, এন কে ৪০, কোহিনুর, ৯০০ এম গোল্ড, প্যাসিফিক ৯৮৪, এলিট, পাইওনিয়র, সুপারসাইন ২৭৬০, সান ২২২, ইউ-৯০১ এবং সুপার ৪৫।

 

এবার পাট চাষের কথাঃ ফাল্গুনের মাঝামাঝি থেকে চৈত্রের শেষ পর্যমত্ম পাটের বীজ বপনের উপযুক্ত সময়। পাট চাষের জন্য উচুঁ ও মাঝারি উচুঁ জমি নির্বাচন করে আড়াআড়িভাবে ৫-৬ টি চাষ ও মই দিয়ে জমি তৈরি করে নিতে হবে। পাটের ভাল জাতগুলো হল : ও-৯৮৯৭ ও এম-১ সিসি-৪৫, বিজেসি-৭৩৭০, সিভিই-৩, বিজেসি-৮৩, সিভিএল-১, এইচসি-২, এইচসি-৯৫ এবং এইচএস-২৪ এসব। স্থানীয় বীজ ডিলার অথবা ব্যবসায়ীর সাথে যোগাযোগ করে জাতগুলো সংগ্রহ করতে পারেন। ছিটিয়ে বুনলে বিঘা প্রতি ৯০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি এবং সারিতে বুনলে বিঘা প্রতি ৬০০ থেকে ৭০০ গ্রাম বীজের প্রয়োজন হবে। পাটের জমিতে সারি থেকে সারির দুরত্ব ৩০ সেমি. বা ১২ ইঞ্চি এবং চারা থেকে চারার দুরত্ব ৭ থেকে ১০ সেমি. বা ৩- ৪ ইঞ্চি রাখবেন। পাট চাষের জন্য সারের মাত্রা হল ইউরিয়া  ২২ থেকে ২৩ কেজি ( দুই কিসিত্ম ), টি এস পি ৪ থেকে ৫ কেজি, এমওপি ৪ থেকে ৫ কেজি, জিপসাম ৫ থেকে ৬ কেজি এবং দসত্মা ১ থেকে ১.৫ কেজি । ইউরিয়া সারের অর্ধেক এবং অন্যান্য সব সার শেষ চাষের সময় প্রয়োগ করতে হবে। আর বাকি অর্ধেক ইউরিয়া পরবর্তীতে উপরি প্রয়োগ করতে হবে ।

 

এবার তিল চাষের কথাঃ ফাল্গুন থেকে চৈত্র পর্যমত্ম তিল বীজ বপনের উপযুক্ত সময়।পানি জমে থাকেনা এমন প্রায় সব ধরনের মাটিতে তিলের চাষ করা যায়। জমি নির্বাচন করে আড়াআড়িভাবে ৫-৬ টি চাষ ও মই দিয়ে জমি তৈরি করে নিতে হবে। তিলের উন্নত জাতগুলো হল : বারি তিল-২, ও বারি তিল-৩, এবং বারি তিল-৪। তিলের বীজ সাধারনত ছিটিয়ে বপন করা হয় এবং হেক্টর প্রতি ৭.০-৭.৫ কেজি বীজের প্রয়োজন হবে। তবে সারিতে বপন করলে অমত্মর্বর্তীকালীন পরিচর্যা করতে সুবিধা হয়। সারিতে বপন করলে সারি থেকে সারির দুরত্ব ৩০ সেমি. এবং চারা থেকে চারার দুরত্ব ৫ সেমি. রাখবেন। তিল চাষের জন্য বিঘাপ্রতি সারের মাত্রা হল ইউরিয়া  ১৬ থেকে ১৭ কেজি (দুই কিসিত্ম ), টি এস পি ২০ কেজি, এমওপি ৬ কেজি, জিপসাম ১৫ থেকে ১৬ কেজি এবং দসত্মা ০.৫থেকে ১ কেজি । ইউরিয়া সারের অর্ধেক এবং অন্যান্য সব সার শেষ চাষের সময় প্রয়োগ করতে হবে। আর বাকি অর্ধেক ইউরিয়া বীজ বপনের ২৫-৩০ দিন পর ফুল আসার সময় উপরি প্রয়োগ করতে হবে ।

 

 

শাকসবজির চাষ বিষয়ে এবার কিছু আলোচনা করা যাকঃ

এ সময় বসতবাড়ির বাগানে জমি তৈরি করে ডাঁটা, পুঁইশাক, করলা, ঢেঁড়স, বেগুন, পটল চাষের উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে।বিশেষ করে ফাল্গুন মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যমত্ম মুখী কচু লাগানো যেতে পারে। দোঅাঁশ মাটি, যেখানে বর্ষাকালে পানি দাড়ায় না এমন জমিতে মুখী কচু লাগানো যেতে পারে। সারি থেকে সারির দুরত্ব ৬০ সেমি. এবং গাছ থেকে গাছের দুরত্ব ৪৫ সেমি. রাখবেন।বীজের হার হেক্টর প্রতি ৪৫০-৬০০ কেজি। এাছাড়া মাদা তৈরি করে পটল, চালকুমড়া এবং মিস্টিকুমড়া  লাগাতে পারেন। মাদার আয়তন ৫০সে.মি.x ৫০সে.মি.x৫০সে.মি. অর্থ্যাৎ এক হাত করে দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও গভীর হতে হবে। মাদার মাটি খুড়ে এক পার্শ্বে রেখে তাতে জৈব সার ৩-৪ কেজি এবং টিএসপি ৫০-৬০ গ্রাম ভালোভাবে মিশিয়ে মাদা পুরন করতে হবে এবং ২-৩ দিন পর তাতে চারা রোপন করবেন।এছাড়া রোপনের ২০ দিন পরপর তিন কিসিত্মতে ২০-২৫ গ্রাম ইউরিয়া ও এমওপি সার মাদা প্রতি প্রয়োগ করতে হবে। তাছাড়া মাদা তৈরি করে চিচিঙা, ঝিঙা, ধুন্দল,শসার বীজ বুনে দিতে পারেন। আর সবজি চাষের জন্য জমিতে পর্যাপ্ত জৈব সার ব্যবহার করতে হবে। এসময় পেঁপে লাগানো যেতে পারে। পেঁপে চাষাবাদের জন্য উঁচু ও মাঝারি জমি ভাল। উপযুক্ত পরিচর্যার দ্বারা প্রায় সব ধরনের মাটিতেই পেঁপের চাষ করা যায়। দুই মিটার দূরে সারি করে প্রতি সারিতে ২ মিটার দূরতেব চারা রোপন করলে ১ হেক্টর জমিতে ২৫০০ গাছের জন্য ৭৫০০ চারার প্রয়োজন হয়। সদ্য সংগৃহীত বীজ হলে ১৪০-১৬০ গ্রাম বীজ দিয়ে প্রয়োজনীয় চারা তৈরী করা যায়। বীজ থেকে বংশ বিসত্মার করা যায়। পলিথিন ব্যাগে চারা তৈরী করলে রোপনের পর চারা দ্রম্নত বৃদ্ধি পায়। ১৫-১০ সেমি আকারের ব্যাগে সমপরিমাণ বালি, মাটি ও পচা গোবরের মিশ্রণ ভর্তি করে ব্যাগের তলায় ২-৩ টি ছিদ্র করতে হবে। তারপর এতে সদ্য সংগৃহীত বীজ হলে ১টি এবং পুরাতন হলে ২-৩ টি বীজ বপন করতে হবে। একটি ব্যাগে একের অধিক চারা রাখা উচিত নয়। ২০-২৫ দিন বয়সের চারায় ১-২% ইউরিয়া স্প্রে করলে চারার বৃদ্ধি ভাল হয়।দেড় থেকে দুই মাস বয়সের চারা রোপন করা হয়। ২ মিটার দূরে দূরে চারিদিকে ২ ফুট পরিমান গর্ত তৈরী করে রোপনের ১৫ দিন আগে গর্তের মাটিতে সার মিশাতে হবে। পানি নিকাশের জন্য দুই সারির মাঝখানে ৫০ সে.মি. নালা রাখা দরকার। বাণিজ্যিকভাবে পেঁপে চাষের জন্য বর্গাকার পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। প্রতি গর্তে ৩ টি করে চারা রোপন করতে হয়। ফুল আসলে ১টি স্ত্রী গাছ রেখে বাকি গাছ তুলে ফেলা দরকার। পরাগায়ণের সুবিধার জন্য বাগানে ১০% পুরম্নষ গাছ রাখা দরকার। প্রতি গাছে ১৫ কেজি জৈব সার, ৫৫০ গ্রাম ইউরিয়া সার, ৫৫০ গ্রাম টিএসপি সার, ৫৫০ গ্রাম এমওপি সার, ২৫০ গ্রাম জিপসাম সার, ২৫ গ্রাম বোরাক্স সার এবং ২০ গ্রাম জিংক সালফেট সার একত্রে ভালভাবে প্রয়োগ করতে হবে। ইউরিয়া ও এমওপি সার ছাড়া সব সার গর্ত তৈরীর সময় প্রয়োগ করতে হবে। চারা লাগানোর পর গাছে নতুন পাতা আসলে ইউরিয়া ও এমওপি সার ৫০ গ্রাম করে প্রতি ১ মাস পর পর প্রয়োগ করতে হয়। গাছে ফুল আসলে এ মাত্রা দ্বিগুণ করতে হবে।

গাছপালা

আমের মুকুলে অ্যানথ্রাকনোজ রোগ এসময় দেখা দেয়। এ রোগ দমনে গাছে মুকুল আসার পর কিন্তু ফুল ফোটার পূর্ব পর্যমত্ম আক্রামত্ম গাছে টিল্ট-২৫০ইসি প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মিলি আথবা ২ গ্রাম ডাইথেন এম-৪৫ প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। এছাড়া আমের আকার মটর দানার মতো হলে গাছে ২য় বার স্প্রে করতে হবে; এ সময় প্রতিটি মুকুলে অসংখ্য হপার নিম্ফ দেখা যায়। আম গাছে মুকুল আসার ১০ দিনের মধ্যে কিন্তু ফুল ফোটার পূর্বেই একবার এবং এর একমাস পর আর একবার প্রতি লিটার পানির সাথে ১.০ মিলি সিমবুস/ফেনম/ডেসিস ২.৫ ইসি মিশিয়ে পুরো গাছ ভালোভাবে ভিজিয়ে স্প্রে করতে হবে।কাঁঠালের ফল পচা বা মুচি ঝরা সমস্যা এখন দেখা দিতে পারে। কাঠাল গাছ এবং নিচের জমি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। আক্রামত্মফল ভেজা বসত্মা জড়িয়ে তুলে মাটিতে পুঁতে ধ্বংস করতে হবে। মুচি ধরার আগে ও পরে ১০ দিন পর পর ২/৩ বার বোর্দ্র মিশ্রণ বা ডায়থেন এম ৪৫ অথবা রিডোমিল গোল্ড প্রতি লিটার পানিতে ২.৫ গ্রাম হারে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। এছাড়া ফলিকুর নামক ছত্রাকনাশক প্রতি ১০ লিটার পানিতে ৫ গ্রাম হারে মিশিয়ে গাছে ফুল আসার পর থেকে ১৫ দিন পর পর ৩ বার স্প্রে করতে হবে;

বাডিং পদ্ধতিতে বরই গাছের কলম করতে পারেন। এজন্য প্রথমে বরই গাছ ছাঁটাই করতে হবে এবং পরে উন্নত বরই গাছের মুকুল ছাঁটাই করে দেশি জাতের গাছে সংযোজন করতে হবে।

 

   এসময়ে মাল্টা গাছে ফুল আসার আগে ম্যানকোজেব ২ গ্রাম এবং ০.৫ গ্রাম চিলেটেড জিংক ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। ম্যাগনেশিয়াম সালফেট ২০০ গ্রাম গাছের গোড়ার মাটিতে প্রয়োগ করতে হবে এবং ২০০ গ্রাম ম্যাগনেশিয়াম সালফেট ১৬ লিটার পানিতে মিশিয়ে সব গাছে স্প্রে করতে হবে। বোরন ২৫-৩০ গ্রাম গাছপ্রতি প্রয়োগ করতে হবে। লেমন বাটারফ্লাই দমনের জন্য ক্লোরোপাইরিফস গ্রম্নপের অথবা এসিফেট গ্রম্নপের ঔষধ স্প্রে করতে হবে।লিফ মাইনার দমনের জন্য এডমায়ার ২০০ এসএল০.৫মিলি বা টাফগর ৪০ ইসি ২ মিলি প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ১০-১৫ দিন পরপর ৩-৪ বার গাছে স্প্রে করতে হবে।

   এসময়ে ড্রাগন ফলচাষের জন্য জমি প্রস্ত্তত করা যেতে পারে। সুনিষ্কাশিত উচু ও মাঝারী উচু জমিতে উভয় দিকে ২.৫-৩ মিটার দূরতেব ১.৫ মিটার x ১.৫ মিটার x ১ মিটার আকারের গর্ত করে উন্মুক্ত অবসথায় রাখতে হবে। গর্ত তৈরির ২০-২৫ দিন পর প্রতি গর্তে ২৫-৩০ কেজি পচা গোবর, ২৫০ গ্রাম টিএসপি, ২৫০ গ্রাম এমওপি, ১৫০ গ্রাম জিপসাম ও ৫০ গ্রাম জিংক সালফেট সার গর্তের মাটির সাথে ভালভাবে মিশিয়ে গর্ত ভরাট করে রেখে দিতে হবে। মাটিতে রসের অভাব থাকলে পানি সেচ দিতে হবে। গর্ত ভরাট করার ১০-১৫ দিন পর প্রতি গর্তে ৫০ সে. মি. দূরতেব ৪টি ড্রাগন ফলের চারা রোপণ করতে হবে। চারা রোপণের ১ মাস পর থেকে ১ বছর পর্যমত্ম ৩ মাস অমত্মর প্রতি গর্তে ১০০ গ্রাম ইউরিয়া প্রয়োগ করতে হবে।

আসছি গাছপালার কথায়ঃ

এ মাসে আমের মুকুল আসে। এ জন্য আমের বোঁটায় রোগ/পোকা থেকে সর্তক থাকতে হবে। কাঠালের ফল পচা ও মুচি ঝরা সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ সময় বার্ডিং পদ্ধতিতে বরই গাছের কলম করতে পারেন। এ জন্য প্রথমেই বরই গাছ ছাঁটাই করতে হবে এবং পরে উন্নত বরই গাছের শাখা দেশী জাতের গাছে সংযোজন করতে হবে। এ ব্যাপারে স্থানীয় উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা পরামর্শ নিতে পারেন।

 

মৎস্যসম্পদ

মাছ চাষের জন্য পুকুর তৈরি ও সংস্কার করার উপযুক্ত সময় এখন পুকুরের পানি শুকিয়ে গেলে নিচ থেকে পচা কাদা তুলে ফেলতে হবে এবং শতাংশপ্রতি ১ কেজি চুন ও ১০ কেজি গোবর বা কম্পোস্ট সার প্রয়োগ করতে হবে;

পানিভর্তি পুকুরে প্রতি শতাংশে ৬ ফুট পানির জন্য ১ কেজি চুন গুলে ঠান্ডা করে দিতে হবে। এছাড়া শতাংশপ্রতি ১০ কেজি গোবর, ২০০ গ্রাম ইউরিয়া ও ১০০ গ্রাম টিএসপি একসাথে মিশিয়ে পানিভর্তি পুকুরে দিতে হবে;

 

প্রাণিসম্পদ

এ সময় মুরগির রানীক্ষেত, মাইকোপস্নাজমোসিস, ফাউল টাইফয়েড, পেটে পানি জমা এসব রোগ দেখা দিতে পারে। সে কারণে প্রয়োজনীয় টিকা প্রদান করতে হবে; খাবারের সাথে ভিটামিন সি ও ভিটামিন ই সরবরাহ করতে হবে; গবাদিপশুকে প্রয়োজনীয় ভ্যাক্সিন দিতে হবে এবং কৃমিনাশক খাওয়াতে হবে। গবাদিপশুকে উন্নত খাবার সবুজ ঘাস, ইউরিয়া মোলাসেস স্ট্র, ইউরিয়া মোলাসেস বস্নক এসব খাওয়াতে হবে।

 

 

কৃষক ভাইয়েরা, কৃষি একটি জটিল বিষয়। তাই এক্ষেত্রে সব সময় সতর্ক থাকবেন। আপনার যে কোন সমস্যায় স্থানীয় উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা এবং উপজেলা কৃষি অফিসে গিয়ে কৃষি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে পারেন।  এয়াড়া যে কোন মোবাইল হতে আপনাদের প্রয়োজনীয় তথ্য মাত্র ২৫ পয়সা প্রতি মিনিট খরচে কৃষি কল সেন্টার (১৬১২৩) হতে জেনে নিন । ** কৃষি বিষয়ক তথ্য প্রাপ্তির সময় =সকাল ৭.০০ টা হতে রাত ৯.০০ টা পর্যমত্ম এবং ** মৎস্য ও প্রাণি সম্পদের তথ্য প্রাপ্তির সময় =সকাল ৯.০০ টা হতে বিকাল ৫.০০ টা পর্যমত্ম ।   (শুক্রবার ও অন্যান্য সরকারি ছুটির দিন এ সেবা বন্ধ থাকে)


 

ছবি
ডাউনলোড
প্রকাশের তারিখ
10/02/2019
আর্কাইভ তারিখ
10/03/2020